রবিবার, ১০ মে, ২০১৫

পর্ব ৬ - ইউনিভার্সিটি সিলেকশন

এটি খুবই সময়সাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া। পছন্দমত ভার্সিটি প্রোফাইলের সাথে ম্যাচ করে খুঁজে পাওয়া অনেক নির্ঘুম রাতের কাজ। যেনতেন প্রকারে সিলেক্ট করলে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশী। মনে রাখবেন প্রতিটি ভার্সিটিতে অ্যাপ্লাই করতে মোটামুটি ১০ হাজার টাকার মতো লাগবে। কাজেই উলটাপালটা অ্যাপ্লাই করে টাকা নষ্ট করবেন কিনা ভেবে নিবেন। 

ভার্সিটি সিলেকশন এর দুইটি পদ্ধতি আছে, ১। প্রোফেসর দের মেইল করে, রিপ্লাই অনুযায়ী অ্যাপ্লাই করা ২। রিসার্চ, পাব্লিকেশন, র‍্যাঙ্কিং দেখে সিলেক্ট করা। 

প্রথমটি সম্পর্কে বিস্তারিত ফেসবুকের হায়ার স্টাডি গ্রুপে সহ ইন্টারনেটে হাজার হাজার রিসোর্স আছে। আমি দ্বিতীয় পদ্ধতিতে করেছিলাম, সেটা সম্পর্কে কিছু বলতে পারি। 

১। নিজের রিসার্চ ইন্টারেস্টে কোন ইউনিভার্সিটিগুলো বিগত ৫/৭ বছরে সবচেয়ে বেশী পেপার পাবলিশ করেছে সেটার লিস্ট বের করা। বেশী আগের সময় হিশেবে নিলে দেখা যায় অনেক প্রফেসর আর এখন ওই ভার্সিটিতে নাই। 
২। এরপর ভার্সিটিগুলার সাইটে গিয়ে রিকোয়ারমেন্টস দেখে নিজের সাথে ম্যাচ করে ফিলটার করা।

উদাহরণমূলক সার্চ লিঙ্কসঃ
বিগত ৫ বছরে শুধু নর্থ আমেরিকাতে ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এ পাবলিকেশন লিস্টঃ  http://academic.research.microsoft.com/RankList?entitytype=7&topdomainid=2&subdomainid=9&last=5&continentid=2

সব সময়ের হিশেবে, সব কন্টিনেন্ট মিলিয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে পাবলিকেশন লিস্টঃ
http://academic.research.microsoft.com/RankList?entitytype=7&topdomainid=2&subdomainid=0&last=0&continentid=0

এছাড়া কোন স্টেট পছন্দ থাকলে সেইভাবেও সার্চ করা যায়। মনে রাখতে হবে যে, নিজের রিসার্চ ইন্টারেস্টের সাথে ভার্সিটি ম্যাচ করাই আসল, র‍্যাঙ্কিং অতটা গুরুত্বপূর্ণ না। ইউএসএর বেশীরভাগ ভার্সিটিই বেশ ভালো কোয়ালিটি মেইন্টেইন করে। 

প্রোফাইলের সাথে ম্যাচ করে তিন ধরণের ভার্সিটি সিলেক্ট করা যায়। ১। অ্যাম্বিশাস (অ্যাডমিশন না হবার চান্সই বেশী) ২। মডারেট(হতেও পারে, নাও) ৩। সেইফ(হবে বলা যায়) । যদি মোট ৫ টা ইউনিতে অ্যাপ্লাই করা চিন্তা করে থাকেন, তাহলে সাধারণত সবাই বলে থাকে যে একটা অ্যাম্বিশাস, আর দুইটা করে মডারেট ও সেইফ এ অ্যাপ্লাই করতে। কিন্তু আল্টিমেটলি দেখা যায় অ্যাম্বিশাস গুলো থেকে রিজেকশনই আসে। আবার ইদানিং দেখা গেছে সেফ ইউনিভার্সিটিও হাই প্রোফাইল স্টুডেন্টদের অ্যাডমিশন দেয় না। কারণ সেই স্টুডেন্টগুলার অন্য যায়গায় হয়ে গেলে সেইফগুলাতে আর যায়না। শুধু শুধু ওদের অনেকখানি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ প্রসেসিং এর হ্যাপা নিতে হয়। আমি অন্তত দুটি কেইসের কথা জানি যেখানে এরকম হয়েছে। তাই আমার মনে হয় মডারেট ইউনির সংখ্যা বাড়ানো ভালো সেইফের চেয়ে। 

তাছাড়া কিছু যায়গায় যদি দেখেন ডিপার্টমেন্টে নতুন ফ্যাকাল্টি জয়েন করেছে, সেখানে নক দিয়ে দেখতে পারেন। সাধারণত নতুন জয়েন করা প্রফেসররা স্টার্টআপ ফান্ড হিশেবে কিছু টেকাটুকা পেয়ে থাকেন। এজন্য ভার্সিটিগুলার নিউজফীডে নজর রাখা ভালো কাজ। 

প্রোফেসরদের মেইল করে অ্যাপ্লাই করার অনেক সুবিধা আছে। খরচ কম, পজিটিভ রিপ্লাই হলে নিশ্চয়তা বেশী। কিন্ত সমস্যা হচ্ছে, প্রোফেসর খোঁজা ভার্সিটি খোঁজার চেয়ে বেশী সুবিধাজনক না। তাছাড়া মাসের পর মাস রিপ্লাইএর অপেক্ষায় বসে থাকতে গেলে অ্যাপ্লাই করার প্রায়োরিটি ডেডলাইন মিস হয়ে যাবার চান্স থাকে। সেজন্য যদি অনেক আগে এই প্রসেস শুরু করতে পারেন, তাহলে প্রোফেসর দের মেইল করেই শুরু করুন। আর হাতে সময় না থাকলে আল্লার নামে ভার্সিটি চয়েস করে অ্যাপ্লাই করে দিন। বাকিটা মহান অ্যাডমিশন কমিটির হাতে।

আরেকটা বিষয়, প্রোফেসরদের মেইল করার সময় বেশী প্রায়োরিটি দেবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোফেসরদের, তারপর অ্যাসোসিয়েট। ফুল প্রোফেসররা বুড়ো হয়ে থাকেন। কাজেই তাদের নক করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে তারা এখনও রিসার্চে অ্যাক্টিভ। লেকচারারদের পকেট ফাঁকা থাকে, নক করে ফায়দার সম্ভাবনা কম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন